Portfolio Management - Smart Stock

Share Market, Analysis, Learning, Tools, News, All in one place.

Sunday, September 16, 2018

Portfolio Management


পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনাঃ পূঁজি বণ্টন কৌশল

পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলর অন্যতম একটি ধাপ হল পূঁজি বণ্টন (asset allocation)। যথাযথ ষ্টক বাছাই ও পূঁজির সুষম বণ্টন বিবিয়োগকারী হিসেবে পুজিবাজারে আপনার ধীর্ঘ মেয়াদী অবস্থান নিশ্চিত করবে। পূঁজি বাজার দ্রুত মুনাফা অর্জনের স্থান নয়। লম্বা সময় ধরে ধারাবাহিক ভাবে মুনাফা প্রাপ্তিই পূঁজি বাজারে বিনিয়োগ করার আসল উদ্দেশ্য। পূঁজি রক্ষা ও মুনাফার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করনে প্রতিটি বিনিয়োগকারীর জন্য পূঁজি বণ্টন কৌশল অনুসরণ করা অত্যাবশ্যকীয়।


বিনিয়োগ পরিকল্পনার প্রথম ধাপে আপনি ভবিষ্যৎ আর্থিক লক্ষ্য, ঝুঁকি সহনশীলতা এবং কত সময়ের জন্য বিনিয়োগ করবেন তার উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় মুনাফার হার (required rate of return) নির্ধারণ করবেন। দ্বিতীয় ধাপে পুঁজিবাজারের সম্ভবনা এবং প্রত্যাশিত রিটার্ন নিরূপণ করুন। একই সাথে অন্যান্য সম্পদ শ্রেণী (asset class) থেকে প্রাপ্য মুনাফা ও ঝুঁকির হার পূর্বানুমান করুন। সাধারণ ভাবে সম্পদকে দুইটি ক্লাস/ভাগে ভাগ করা যায়: (১) প্রচলিত সম্পদ শ্রেণী ( যেমনঃ স্টক, বন্ড, এবং নগদ অর্থ) এবং (২) বিকল্প সম্পদ শ্রেণী (যেমনঃ মিউচুয়াল ফান্ড, পণ্যদ্রব্য, ভূমি-ঘরবাড়ি (রিয়েল এস্টেট), প্রাইভেট ইকুইটি, হেজ ফান্ড ইত্যাদি)।


তৃতীয় ধাপ হল পূঁজি বণ্টন। প্রথম ধাপে ঠিক করা আর্থিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য, আপনার ঝুঁকি গ্রহণের ইচ্ছা ও সক্ষমতার ভিত্তিতে পূঁজি বণ্টন কৌশল গড়ে উঠবে।আপনার পূঁজি, কোন সম্পদ শ্রণীতে কতটুকু পরিমাণে বিনিয়োগ করা হবে তা-ই নির্ধারিত হবে এই ধাপে। চরিত্রগত ভেবে প্রতিটি সম্পদ শ্রেণীর ঝুঁকি ও মুনাফার মাত্রায় তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। কম ঝুঁকি গ্রহণে অল্প মুনাফা এবং বেশী ঝুঁকি গ্রহণে অধিক মুনাফা। মুনাফা ও ঝুঁকি বৈচিত্রতার সর্বচ্চ সুবিধা নেয়ার জন্যই পূঁজি বণ্টন কৌশল প্রয়োজনীয়।


উদাহরণস্বরূপঃ
পোর্টফোলিও-১ (২০% স্টক, ৮০% বন্ড/এফডিয়ার), পোর্টফোলিও-২ (৮০% স্টক, ২০% বন্ড/এফডিয়ার)।

পোর্টফোলিও-২ এর তুলনায় পোর্টফোলিও-১ এর ঝুঁকি ও মুনাফা উভয়ই কম। কিন্তু পোর্টফোলিও-১ নিয়মিত ভাবে অধিক নগদ অর্থ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেয়। এটি লক্ষণীয় যে, পোর্টফোলিও-২ একটি অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ পোর্টফোলিও। এটি এক জন ২৫/৩০ বছর বয়সী বিনিয়োগকারীর জন্য উপযোগী। কারণ তার পক্ষে স্টক মার্কেটের উঠা-নামা সহ্য করে ধীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করা সম্ভব। কর্মক্ষম হওয়ায় তার নগদ অর্থ প্রাপ্তির বিকল্প উৎস (চাকুরী, ব্যবসা) রয়েছে। তাই স্বল্প সময়ে নগদ প্রাপ্তির চাইতে সর্বচ্চ পরিমাণ মুনাফা অর্জন তরুণ বিনিয়োগকারীদের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে, পোর্টফোলিও-১ মধ্য বয়সী অথবা পৌড় বিনিয়োগকারীরদের জন্য উপযোগী। যিনি অবসরের কাছাকাছি অথবা জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন তাঁর পক্ষে পূঁজি বাজারের বড় পতন সহ্য করা প্রায় আসম্ভব। অনেক বেশী মুনাফা অর্জনের চাইতে ঝুঁকি মুক্ত উপায়ে কম মুনাফায় নিয়মিত অর্থ প্রাপ্তি তাঁর জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।


কেন পুজি বণ্টন গুরুত্বপূর্ণ?
পূঁজি বণ্টন কৌশল অবলম্বনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হল এটি বিনিয়োগে বৈচিত্র আনে (investment diversification)। বিভিন্ন শ্রেণীর সম্পদের সংমিশ্রণে বিনিয়োগকারী তার পোর্টফোলিও ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন। যদিও বেশির ভাগ মানুষ এই ধারণা বুঝতে চায় না, তারা সব সময় সর্বাধীক রিটার্ন দেয়া সম্পদেই বিনিয়োগ করতে চান। যা প্রকারন্তরে ব্যার্থতা ডেকে আনে। উদাহরণ স্বরূপ,


বিনিয়োগকারী-১ তার পোর্টফলিওতে ৫০% ষ্টক ও ৫০% বন্ড/এফডিয়ার ধারণ করেন। অপর দিকে বিনিয়োগকারী-২ তার পোর্টফলিওতে শুধু ষ্টক ( ১০০%) ধারণ করেন। প্রথম বছর পূঁজি বাজার ১০% ও ব্যাংক ৬% রিটার্ন দিয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় বছর পূঁজি বাজার -৫% ও ব্যাংক ৬% রিটার্ন দেয়ায় দুই বছর পর বিনিয়োগকারী-১ তাঁর প্রতিযোগীর তুলনায় অধিক মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। মূলত উচ্চ ঝুঁকির ষ্টক ও নিম্ন ঝুঁকির এফডিয়ারে পুঁজির সুষম বন্টন কৌশলই বিনিয়োগকারী-১ এর সাফল্যের মূল রহস্য।

 
বিনিয়োগকারী-১ [১ম বছর-(১০+৬)/২= ৮, ২য় বছর- (৬-৫)/২=০.৫। ২ বছর পর মোট রিটার্ন ৮.৫%]
বিনিয়োগকারী-২ [১ম বছর-১০, ২য় বছর- (-৫)। ২ বছর পর মোট রিটার্ন মোট ৫%]


বিভিন্ন প্রকার পূঁজি বণ্টন কৌশল:

বিনিয়োগের সময় কাল এবং ঝুঁকি সহনশীলতা বিবেচনা করে সম্পদের আদর্শ মিশ্রন তথা অনুপাত নির্ধারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল কাজ। এই অনুপাত ব্যাক্তি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হবে। বিনিয়োগের জন্য যার দীর্ঘ সময় এবং উচ্চ ঝুঁকি সহনশীলতা রয়েছে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই স্টক মার্কেটের জন্য অধিক পূঁজি বরাদ্দ করবেন। পোর্টফোলিওতে স্টক কত টুকু ধারণ করা উচিত তার একটি প্রাচীন নিয়ম (traditional rule of thumb) রয়েছে। বলা হয়ে থাকে ১০০ থেকে আপনার বয়স বাদ দিলে যা থাকে ততটুকু পূঁজি ষ্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করা শ্রেয়। যদি আপনার বয়স ২৫ এবং মোট পূঁজি ১০ লক্ষ টাকা হয়, তবে পোর্টফোলিওতে (১০০-২৫)=৭৫% স্টক মার্কেট ও বাকি ২৫% ব্যাংক এফডিয়ার থাকা উচিত। অর্থাৎ ১০ লক্ষ টাকা থেকে ৭.৫ লক্ষ পূঁজি বাজারে ও ২.৫ লক্ষ ব্যাংকে রাখা উচিত। তবে বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই নিয়মকে বিশেষজ্ঞরা অত্যন্ত রক্ষণশীল পূঁজি বণ্টন কৌশল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।


বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় দুই ধরণের পূঁজি বণ্টন কৌশল নিম্নে আলোচনা করা হলঃ

ধীর্ঘ মেয়াদী পূঁজি বণ্টন কৌশল (Strategic asset allocation): এই কৌশল একটি সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে একজন বিনিয়োগকারীর ঝুঁকি সহনশীলতা এবং প্রত্যাশিত রিটার্ন মাথায় রেখে বিভিন্ন সম্পদের জন্য বিভিন্ন অনুপাতে পূঁজি বণ্টন করে। ধরুন যদি স্টক মার্কেটের জন্য ৫০% পূঁজি বরাদ্দ রাখা হয় তবে ৫% থেকে ১০% অনুমোদনযোগ্য বিচ্যুতি অনুসরণ করা হয়। যদি ষ্টক মার্কেটে আপনার পূঁজি অনুমোদনযোগ্য বিচ্যুতি এর অধিক হ্রাস-বৃদ্ধি হয় তবে আপনাকে পোর্টফোলিও সমন্বয় (rebalanced) করতে হবে। ১০% বিচ্যুতি অনুসারে পূঁজি ৫০% থেকে ৪০% বা তার বেশী নীচে নেমে গেলে আপনি অতিরিক্ত স্টক কিনবেন। আর যদি বরাদ্দকৃত পূঁজি ৬০% এর বেশী বেড়ে যায় তবে আপনি স্টক বিক্রি করে পুনরায় পুঁজির অনুপাত ৫০% এ ফিরিয়ে আনবেন।


রক্ষণশীল পূঁজি বণ্টন কৌশল [৪০% ষ্টক, ৪৫% বন্ড/এফডিয়ার, ১৫% ক্যাশ]
মধ্যবর্তী পূঁজি বণ্টন কৌশল [৬০% ষ্টক, ৩০% বন্ড/এফডিয়ার, ১০% ক্যাশ]
আগ্রাসী পূঁজি বণ্টন কৌশল [৭৫% ষ্টক, ২০% বন্ড/এফডিয়ার, ৫% ক্যাশ]


স্বল্প মেয়াদী পূঁজি বণ্টন কৌশল (Tactical asset allocation): সাধারণ অবস্থায় বিনিয়োগকারীগন ধীর্ঘ মেয়াদী পূঁজি বণ্টন কৌশল অবলম্বন করবেন। কিন্তু পূঁজি বাজার বা বন্ড/এফডিয়ার মার্কেটে ঘটে যাওয়া আকর্ষিক দুর্ঘটনা থেকে আত্নরক্ষার্থে কিংবা হটাৎ প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে ধীর্ঘ মেয়াদী পূঁজি বণ্টন কৌশল থেকে সরে আসাই স্বল্প মেয়াদী কৌশলের মূল লক্ষ। ধরুন আপনার ব্যাংক বন্ড/এফডিয়ারের রিটার্ন কমিয়ে দিল ফলে এই খাতে আপনার বিনিয়োগ আর আগের মত লাভজনক নয়। সুতরাং আপনি বন্ড/এফডিয়ারের কিছু অংশ সাময়িক সময়ের জন্য পুজি বাজারে নিয়ে আসবেন। বন্ড/এফডিয়ারের রিটার্ন আবার আগের স্থানে ফিরে গেলে আপনিও অতিরিক্ত অর্থ পুজি বাজারে থেকে সরিয়ে নিবেন। অর্থাৎ আপনি আবার মূল কৌশলে ফিরে যাবেন। আবার পূঁজি বাজারে উত্থান ঘটলেও হাতে থাকা নগদ অর্থ স্বল্প মেয়াদে পূঁজি বাজারে আনতে পারেন। বাজার স্বাভাবিক হয়ে এলে অতিরিক্ত বিনিয়োগ আবার নগদ অর্থে পরিবর্তন করুন। বিপরীত ভাবে ষ্টক মার্কেটে পতন শুরু হলে আপনি এখান থেকে অর্থ সরিয়ে ব্যাংকে রাখুন। পতন শেষে আবার তা পূঁজি বাজারে ফিরিয়ে আনুন।

পূঁজির সুষম বণ্টন পোর্টফোলিও নির্মাণ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যাক্তি ভেদে এটি খুব কঠোরভাবে অথবা কিছুটা ছাড় দিয়ে অনুসরণ করা হয়। ষ্টক, বন্ড ও নগদ অর্থ – এদের মিশ্রনটি কোন অনুপাতে হবে তা একান্তই ব্যাক্তির বয়স, ঝুঁকি সহনশীলতা, ভবিষ্যৎ লক্ষ, বিনিয়োগ সময়কাল এবং পুঁজি বাজার থেকে তার প্রত্যাশার উপর নির্ভরশীল। এটা খেয়াল করা জরুরী যে, এক ব্যক্তির জন্য যে সম্পদ মিশ্রন আদর্শ ভিন্ন ব্যাক্তির জন্য তা সম্পূর্ণরূপে অনুপযুক্ত হতে পারে।


Courtesy By: Hasan Shaharear

1 comment:

  1. When winning PMP accreditation it implies a superior compensation, acknowledgment and work progression. Managers are searching for PMP endorsement when employing too. ExcelR PMP Certification

    ReplyDelete

Note: Only a member of this blog may post a comment.